অল্প বিনিয়োগে প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবসা ৩


অল্প বিনিয়োগে প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবসা ৩

আগের পোষ্টে উল্লেখ করা হয়েছে অল্প বিনিয়োগে ভিডিও তৈরী করার ব্যবসার কথা। যদি ফটোগ্রাফির কথা বলা হয় তাহলে হয়ত প্রশ্ন করতে পারেন ভিডিও থাকলে ফটোগ্রাফি নিয়ে মাথা ঘামায় কে ? এই ভুল বহু মানুষ করে। এমনকি বিয়ের ভিডিও করা হচ্ছে কাজেই ফটোগ্রাফ প্রয়োজন নেই এটাই ধরে নেয়। যখন প্রয়োজন হয় তখন আর কিছু করার থাকে না। আপনি কি জানেন একজন ভিডিওগ্রাফার যে পরিমান অর্থ উপার্জন করেন একজন ফটোগ্রাফার তারথেকে বেশি আয় করেন ?
অবশ্যই আপনাকে সত্যিকারের ফটোগ্রাফার হতে হবে। ক্যামেরার সাটার রিলিজ বাটন চাপলে ছবি ওঠে এটুকু জেনে আপনি যথেষ্ট টাকা নিতে পারেন না। 
কি কি শিখতে হবে
আপনাকে ফটোগ্রাফি শিখতে হবে। সাধারনভবে ফটোগ্রাফিকে যতটা সহজ মনে করা হয় বাস্তবে বিষয়টি তত সহজ না। ক্যামেরা ব্যবহারের বহু পদ্ধতি যেমন আছে, তেমনি লাইট সম্পর্কে ভাল জ্ঞান প্রয়োজন, সেইসাথে শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গি। ফ্যাশান পত্রিকায় যে ছবিগুলি দেখেন তাদের অনেক ফট্রেগ্রাফার এতটাই খ্যাতিমান যে একজন মডেল তারকাছে ছবি উঠানোর সুযোগকে সাফল্যের পথ বলে বিবেচনা করে।
সম্ভব হলে ফটোগ্রাফির কোর্স করুন। ইন্টারনেটে ফটোগ্রাফি বিষয়ক বহু তথ্য পাওয়া যায়। বিভিন্ন ওয়েবসাইটে নিয়মিত ফটোগ্রাফি বিষয়ে পরামর্শ টিউটোরিয়াল ইত্যাদি দেয়া হয়। এই সাইটেও রয়েছে। সেগুলি দেখার পাশাপাশি ভাল ছবি দেখে তারসাথে মন্দ ছবির পার্থক্য কি বোঝার চেষ্টা করুন। এবং প্রচুর পরিমান ছবি উঠান। সেগুলি বিশ্লেষন করুন।
সরাসরি উঠানো ছবি কখনোই মনের মত হয় না। একে সফটঅয়্যার ব্যবহার করে আকর্ষনীয় করতে হয়। অনেক সময় বাস্তবে মুখের দাগ থাকলে সেটাও ঠিক করা হয়। (যার ছবি তিনি সবসময়ই ছবিতে সুন্দর দেখতে চান। এজন্য ফটোশপ, লাইটরুম বা অন্য কোন ফটো এডিটিং সফটঅয়্যারে দক্ষতা অর্জন করুন।
কি যন্ত্রপাতি প্রয়োজন
আপনার অবশ্যই এসএলআর ক্যামেরা প্রয়োজন হবে, পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরা দিয়ে পেশাদার কাজের আশা করবেন না। একেবারে কম বাজেট হলে নাইকন ডি৩১০০ পর্যায়ের ক্যামেরা ব্যবহার করতে পারেন তবে আরেকটু বেশি বাজেটের ডি৭০০০ পর্যায়ের ক্যামেরা হলে ভাল ফল পাবেন। এরসাথে যে লেন্স দেয়া হয় সেটাও গুরুত্বপুর্ন। অন্যথায় পৃথক লেন্স কেনা প্রয়োজন হবে।
ক্যামেরার সাথে ফ্লাম কেনার দিকে গুরুত্ব দিন। ক্যামেরার বিল্টইন ফ্লাশ অনুষ্ঠানের ছবি উঠানোর জন্য যথেষ্ট না। ১০০ ডলারের কমদামী ফ্লাশ হলেও অনেক ভাল ফল পাবেন। টাইপড ব্যবহার করুন। ৫০ ডলারের মধ্যে ফটোগ্রাফি ট্রাইপড কেনা সম্ভব।
কাজ কিভাবে পাবেন
আপনি যখন নিজেকে পেশাদার ফটোগ্রাফার হিসেবে পরিচয় দেবেন তখন প্রচারের জন্য প্রচলিত ব্যবস্থাগুলি গ্রহন করবেন। স্থানীয়ভাবে বিজ্ঞাপন দেবেন, পরিচিতদের মাধ্যমে প্রচার চালাবেন। বিনামুল্যের ব্লগ করে এবং সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট (ফেসবুক, ফ্লিকার) এর মাধ্যমে নিজের ভাল ছবিগুলি অন্যদের দেখাতে পারেন। একথা ঠিক, ফটোগ্রাফার হিসেবে শুরুতে কাজ পাওয়া কঠিন। সেটা সব ব্যবসার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
নিজস্ব ষ্টুডিও ব্যবহার করলে তার প্রচারের ব্যবস্থা করুন।
কাজ কোথায় পাবেন
বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিস্ঠানের ছবি উঠানোর প্রয়োজন হয় বিভিন্ন কারনে। মুলত অনুষ্ঠান করার সময় তার ছবি উঠানোর প্রয়োজন হয়। এছাড়া বিজ্ঞাপনের জন্য মডেল বা পন্যের ছবি থেকে শুরু করে গ্রাফিক ডিজাইনার, নাটকের শ্যুটিং, রাজনৈতিক সভা-সেমিনার সব যায়গায় ফটোগ্রাফার প্রয়োজন হয়।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছবি বিক্রি করে নিয়মিত আয় করা সম্ভব। ছবির মান যত ভাল দাম তত বেশি এই নিয়মে। এজন্য বেশকিছু প্রতিস্ঠান রয়েছে যারা হোষ্টিং, প্রচার, বিক্রির ব্যবস্থা করে। তাদেরকে মাসিক ফি দিতে হয়, কিন্তু পরিবর্তে ছবি তোলা ছাড়া আপনাকে বিশেষ কিছু করতে হয় না।
কিভাবে শুরু করবেন
ফটোগ্রাফি এমনই একটি কাজ যা অন্য কাজের পাশাপাশি শুরু করা সম্ভব। অবশ্যই কাজের ধরন অনুযায়ী। এজন্য অফিস প্রয়োজন হয় না। আর যদি পুরোপুরি ব্যবসা হিসেবে শুরু করতে চান তাহলে ষ্টুডিও বানিয়ে করাই ভাল। ষ্টুডিওর জন্য বিশেষ ধরনের লাইট প্রয়োজন হয়। এছাড়া ঢাকার মত শহরে যায়গার খরচ যথেষ্ট বেশি। কাজেই শুধুমাত্র ফটোগ্রাফি ব্যবসা করার চেয়ে সাথে ভিডিও রাখা সুবিধেজনক।

 
Design by Wordpress Theme | Bloggerized by Free Blogger Templates | JCPenney Coupons